আব্দুস সবুর মন্ডল নামের এক যুগ্ম সচিবের জন্য সভ্য দুনিয়ায় অকল্পনীয় কায়দায় একটি ফেরী তিন ঘন্টা আটকে রাখায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তিতাস ঘোষ নামের এক কিশোরের। যুগ্ম সচিব নামধারী ওই ভিআইপির নিরাপদ ফেরি পারাবারের জন্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষে ফোনে ফেরিঘাটে নির্দেশ দেয়া ছিল। ঘাটের কম বেতনের কর্মচারীদের কাছে যেহেতু ডিসি অফিসের আদেশের মূল্য বেশি এবং অবশ্য পালনীয় তাই তারা একটি মৃত্যু পথযাত্রী শিশুর অভিভাবকদের আকুল কান্নাকেও আমলযোগ্য মনে হয়নি। অতঃপর হাসপাতালে নেবার আগেই পথে বাচ্চাটির মৃত্যু হয় বিনা চিকিৎসায়। এ নিয়ে প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরে মূলধারার মিডিয়ায় হৈচৈ শুরু হলে যথারীতি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কোন একটি ঘটনা ধামাচাপা দিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন বাংলাদেশ প্রশাসনের একটি রুটিন অভ্যাস। এবং সংযুক্ত অভ্যাসটি হলো এসব রিপোর্টের মাধ্যমে জনগনের সঙ্গে মিথ্যা কথা বলা হয়। নিজের পিঠ বাঁচিয়ে দোষ চাপানো হয় অন্যের ঘাড়ে। এক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।
‘কেষ্ট ব্যাটাই চোর’ গল্পের মতো রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঘটনার পিছনে ওই যুগ্ন সচিব বা জেলা প্রশাসনের কোন দায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। সব দোষ ফেরির কর্মচারীদের! হাইকোর্টের উদ্দেশে এই রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে এটর্নি জেনারেলের অফিসে। উচ্চ আদালতের ছুটি শেষে এই রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট বেঞ্চকে দেয়া হবে। মাননীয় বিচারপতিদের উদ্দেশে বলছি স্বাভাবিক বোধ শক্তি কাজে লাগিয়ে মতলবি এই রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করুন। কথিত ভিআইপি যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মন্ডল, তার ধামাধরা মাদারিপুরের ডিসিকে জবাবদিহির উদ্যোগ নিন। এদের কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে কোর্টে আনলেও বিনা চিকিৎসায় মৃতুবরনকারী কিশোর তিতাস তার মায়ের কোলে ফিরবেনা। এই মিথ্যাবাদী বর্বর প্রশাসনের খোলনলচে পাল্টাতে হবে। নইলে তিতাসদের মৃত্যু মিছিল থামবেনা।
এসব ক্ষেত্রে আসল ঘটনা যা হয় তা একটু খোলাসা করে বলি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী এদের সফরসূচি সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোয় লিখিতভাবে যায়। যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কথিত ভিআইপিদের সফরসূচি সেভাবে লিখিতভাবে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর কিছু নয়। ঢাকার বাইরে গেলে কিছু বদমাশ আমলার ভিআইপি ভাবটা টনটনে হয়। নিজেদের ভিআইপি ভাবতে জোশ বাড়ে। এরা তখন নিজে অথবা তাদের স্টাফদের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের কাছে এটা চান-সেটা চায়। ঢাকায় গেলে জেলা প্রশাসকদেরও যেহেতু মন্ত্রণালয়ে এটা লাগে সেটা লাগে তাই এসব বদমাশ স্যাররা যা চায় এরচেয়েও এরা বেশি ঢেলে দিতে চায়। এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। এক্ষেত্রে কোন লিখিত কাগজ লাগেনি। লিখিত কাগজ খুঁজে এ হত্যার ফরমান প্রমান করা যাবেনা।
সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচনা ধামাচাপা দিতে এ নিয়ে অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে যে কমিটি হয়েছিল সেটি মূলত স্বজাতির পিঠ বাঁচানো কমিটি। এক্ষেত্রে অপরাধ অন্য কারও হলে মাথায় ঘিলুওয়ালা অতিরিক্ত সচিব হলে অন্তত সংশ্লিষ্টদের কললিস্ট চেক করে দেখা হতো। বিদেশে গিয়ে বিদেশিদের সামনে আমতা আমতা করলেও বাংলাদেশের আমলারা চাইলে পারেননা এমন কী কিছু আছে ইহজগতে? এখন এই আমলে এরা অহোরাত্রি বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনা বলতে অজ্ঞান। কোন কোন ক্ষেত্রে ‘ক্যাথোলিক মোর দ্যান পোপ।‘ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও এদের সঙ্গে পারেনা। ক্ষমতার গণেশ উল্টে গেলে এদের বদলাতে-ভোল পাল্টাতে সময় বেশি লাগেনা।
রাজনৈতিক আব্বা-আম্মাকে খুশি করতে জজ মিয়া নাটক কী বাংলাদেশের আমলা কান্ড নয়? জজ মিয়ার ১৬৪ ধারার জবানবন্দী কী কোন একজন বিচারক নেননি? জজ মিয়া তার ইন্টারভ্যুতে বলেছে সেই সাজানো জবানবন্দী দেয়ায় সেদিন সেই বিচারক তাকে ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরিয়ানিও খাইয়েছে! বাংলাদেশের সেই বিচারক চেহারার খুব বেশি পরিবর্তন এসেছে কী? এক্ষেত্রেও রাজনৈতিক আব্বা-আম্মার হস্তক্ষেপ থাকলে এই অতিরিক্ত সচিব কমিটি কী এ ধরনের নীতি-বোধহীন একটি মনগড়া রিপোর্ট দিতে পারতো? আমার কাছে এটি সরকারি কর্মকর্তা নামের তিন জানোয়ারের কমিটি রিপোর্ট ছাড়া আর কিছু নয়। একটা সত্য অবশ্য রিপোর্টে আছে! তাহলো রিপোর্টের কোথাও উল্লেখ করা নেই যে তিতাস ছেলেটি বেঁচে আছে! অথবা ‘সরকার ও প্রশাসনকে বিতর্কিত করে বিপদে ফেলার জন্যে তিতাসকে গুম করেছে অথবা লুকিয়ে রেখেছে তার বাবা-মা’! জানিনা এই তিন মিথ্যাবাদী কর্মকর্তার তিতাসের বয়সী কোন ছেলেমেয়ে-স্বজন আছে কীনা! থাকলেইবা কী! জানোয়ারদের বোধজ্ঞান কম থাকে বলে ক্ষুধার সময় নিজের সন্তানও খেয়ে ফেলে অনেক জানোয়ার। এই তিন জানোয়ারের ছবি কারো কাছে থাকলে আমাকে দেবেন। পোষ্টাবো। বাংলাদেশে জানোয়ারদের বিচারতো সব সময় হয়না। ছবিসহ পোষ্টাইলে অন্তত সোশ্যাল মিডিয়া ট্রায়াল হয়।
যে যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মন্ডলের ভিআইপিত্ব জাহির করতে এই মৃত্যু তার একটি ছবি পেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম। এরপর এক জেলার দায়িত্বশীল বিচারক আমার সঙ্গে ইনবক্সে যোগাযোগ করেন। আমার পোষ্টে কিছু মানুষ নিজেদের রাগ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের নাগরিক জীবন নানাভাবে জিম্মি। নিজেদের কথা প্রকাশ করতে এখন সোশ্যাল মিডিয়াই তাদের ভরসা। জিম্মি জীবনটা তাদের এতোটাই বিপদসংকুল যে সবাই সোশ্যাল মিডিয়াতেই প্রতিক্রিয়া প্রকাশের সাহস রাখেননা। আমারেই পোলাপান সারাদিন বাংলাদেশ থেকে হুমকি দেয়! একবারও ভাবেনা তার হাতটা অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত লম্বা না।
একবার লংগদুর এক ঘটনার প্রতিবাদে ক্যানবেরায় এক প্রতিবাদ হলো। আমি সেই অনুষ্ঠানে যাইনি। যারা গিয়েছেন তারা কিছু ছবি দিলে আমি আমার ওয়ালে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম। বহুদিন পর সে ঘটনার একটা লিংক ইনবক্সে দিয়ে একজন হুমকির সুরে বললেন আপনি বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি তাকে বললাম তোমার নেত্রী যখন বিরোধীদলের নেত্রী হিসাবে লংগদুর এমন একটি ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন তখন ঢাকা থেকে রিপোর্টার হিসাবে আমাকেও সঙ্গে নিয়ে যান। তখন সম্ভবত তোমার তখন জন্মও হয় নাই। কাজেই এখন চাকরি পাইছো করো যারেতারে হুমকি দেবার চেষ্টা করোনা।
যাক, যে বিচারকের কথা বলছিলাম। তিনি শুরু করেছেন একটি তথ্য দিয়ে। তাহলো অপ্রাপ্ত বয়স্ক তিতাস ছেলেটি বেআইনিভাবে মোটর সাইকেল চালাচ্ছিল। ওই অবস্থায় সে দূর্ঘটনা ঘটিয়েছে, ওই যুগ্ম সচিবের জন্যে ফেরীটা আটকে রাখা হয়নি! এমনিতে একটি ফেরি ঘাটে ভিড়তে ছাড়তে তিন ঘন্টা সময় লাগে, আমলাদের ওপর রাজনৈতিক চাপ, গত দুই নির্বাচনে তার অভিজ্ঞতা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের লোকজন আমাকে ভালোবাসেন বলে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি থেকে শুরু করে মন্ত্রী-এমপি-আমলা-বিচারক-নানা শ্রেনী পেশার মানুষ-স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েরাও আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আছেন। এই বিচারকও বহুদিনের ঘনিষ্ঠ। বিদেশে রাষ্ট্রীয় খরচে প্রশিক্ষনও পেয়েছেন। কিন্তু ফলাফল শূন্য। দেশে তিনিও সামাজিক-প্রশাসনিক চিন্তা-চেতনার ধারায় রোগাক্রান্ত। একটা ঘটলে সবাই যার যার দায় এড়াতে ব্যস্ত!
এই বিচারকের সঙ্গে ইনবক্স বাহাসের পুরোটার ক্রিনশট নিয়ে রেখেছি। কিন্তু তিনি তা ব্যবহার না করতে অনুরোধ করায় তার অনুরোধ রেখেছি। এটাই সাংবাদিকতা। যা বিদেশে পড়তে এসে শিখেছি। মনে করুন আমি আপনার একটা ইন্টারভ্যু করেছি। আপনি ইন্টারভ্যু দেবার পরও যদি মনে হয় এ ইন্টারভ্যু এখন প্রকাশ হলে আপনার ক্ষতি হতে পারে, তখন আপনি তা না প্রকাশের অনুরোধ করলে তা আমি শুনতে বাধ্য। সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ন এ দিকটি আমিও দেশে থাকতে জানতামনা। আমার কোন সিনিয়রও তা কখনো বলেননি।
এখন আমার এই বিচারক ভাই’র যুক্তি সমগ্রের প্রসঙ্গে আসি। তিতাস যদি অপ্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় মোটর সাইকেল চালায় সে বিচার ভিন্ন। বাংলাদেশের পরিবহনসহ নানা সেক্টরে অপ্রাপ্তবয়স্ক বিস্তর ছেলেপুলে কাজ করে। খুঁজলে আপনার বাসায়ও পাওয়া যেতে পারে। যেহেতু যে তিতাসকে আপনারা অলরেডি মেরে ফেলেছেন এখন মারার প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে বৈধ-অবৈধ প্রসঙ্গে সামনে টেনে আনার মানে কী? না বৈধ চালক হলে তার ফেরি আটকাতেননা? দেশটাতে রাজনীতিক থেকে শুরু করে আমলা-বিচারক সবাই যার যার মতো করে দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন! মনে করুন ওই ফেরি আটকানোর শিকার তিতাস নামের এক মৃত্যু পথযাত্রী কিশোর ছিলোনা। ছিল কিছু আমজনতা। আপনার সুবিধার জন্যে তাদের কী ফেরি আটকে রাখতে পারেন? এই দাপট আপনাদের কে দিয়েছে? একটা ঘটনায় কোন একজনের দাপটের জন্যেতো পুরো প্রশাসন দায়ী নয়। যে দায়ী তার দায় দেবেননা কেনো? বেআইনি দাপটে দেখানেওয়ালা সাংবাদিকদেরও আমি সমালোচনা করি। আপনি কেনো আপনার কোন বাটপার-মতলববাজ সহকর্মীর দায় এড়াতে আদাজল খেয়ে নামবেন?
আজকাল নানাকিছুতে একটু মুখস্ত বিষয় ‘রাজনৈতিক চাপ’! এটি কী বাংলাদেশের আজকের সমস্যা? না কাল চলে যাবে? আপনি যখন চাকরিতে ঢোকেন তখন কী এই চাপ ছিলোনা? এটা জেনেশুনেইতো আপনি চাকরিতে এসেছেন তা নয়কী? না আপনাকে জোর করে বাড়ি থেকে ধরে বেঁধে আনা হয়েছে? না এখন জোর করে বেঁধে রাখা হয়েছে যে আপনি এখন চলে গেলে বাংলাদেশটা অন্ধকার হয়ে যাবে? এ কথাটা আমি সবাইকে বলি, তাহলো যে কাজে আপনার পোষায়না সে কাজ আপনি করবেননা। আমার মতো পেশা ছেড়ে কামলা হয়ে যাবেন। আপনারা পড়াশুনা-বিচার-বুদ্ধি বেশি বলেইতো আপনাদের প্রশাসনে নিয়ে আসা হয়েছে। কাজেই এ কাজ ছেড়ে দিলে আপনাদের অন্তত আমার মতো কামলা হতে হবেনা। এতো চাপ বোধ করেন, বলেন কথায় কথায় বান্দরবানে বদলি! কিন্তু এতো খারাপ চাপের চাকরি ছাড়েননা কেনো? কিসের আশায়? কিসের মায়ায়? বাংলাদেশের দাপুটে যে কেউ বিদেশ গেলে প্রথমেই নিজেদের ওজন করতে শেখে। প্রথমেই ফেইল ড্রাইভিং’এ। বিদেশের সব ম্যাজিষ্ট্রেট নিজের গাড়ি নিজে চালায়। আপনাদের ড্রাইভার লাগে। এই বয়সে তিন মাসের চেষ্টায়ও এসব দেশের ড্রাইভিং টেস্টে পাশ করলে পারলে সেটি হবে জীবনের বড় একটি সাফল্য।
রাজনৈতিক চাপের কারনে সরকারি চাকরি কঠিন হলে কী করে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের মতো একটি রাজনৈতিক সরকারের ভিত কাঁপিয়ে দেয়া কোটা আন্দোলন হয়? স্বার্থ ধান্ধার আন্দোলনটি এতো শক্তিমত্তার ছিল যে সরকার নিজের গদি রক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা পর্যন্ত বাতিল করে দিয়েছে! অথচ তাদের যৌবনের শৌর্যে স্বাধীন এই দেশ। যুদ্ধে যাবার সময় তারা নিজের জন্যে কিছু চাইতে যায়নি। নিজের জন্যে কিছু চাইতে অন্তত দেশের জন্যে যুদ্ধে যাওয়া যায়না। যুদ্ধ থেকে ফিরেও তাদের কেউ বলেনি আমাদের কোটা সুবিধা দাও। রাষ্ট্র নিজের কৃতজ্ঞতায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পোষ্য কোটা চালু করেছিল। সেই কোটাও বাতিল করতে সরকারকে বাধ্য করা হয়েছে! এতো মধুকুঞ্জ সরকারি চাকরি!
আবারও বলি যে যখন মনে করবেন এই চাকরি ভালোনা, এই চাপ-সেই চাপ, বেতন কম বা বেতন নেই, সে চাকরি কেউ করবেননা। বাংলাদেশের রাস্তার পাশের যে মানুষটি সেদ্ধ ডিম-পিঠা এসব বিক্রি করেন, তারও একটি সৎ পেশাজীবন আছে। ডিম-পিঠা বিক্রি করেও তার সংসার চলে। বাংলাদেশের কত যুবক আজ পড়াশুনা করে গ্রামে পশু-পাখি পালন, সব্জি চাষ করে আজ স্বাবলম্বী। তাদের আমি স্যালুট করি। কারও কাছে হাত পেতে নয়, তাদের যৌবন কাজে লাগিয়ে তারা আজ স্বাধীন স্বাবলম্বী। অজুহাত মাষ্টারদেরই ভিআইপি ভাব দেখাতে আব্দুস সবুর মন্ডলদের মতো স্পেশাল ফেরি লাগে। এরা এই বেআইনি দাপট দেখিয়ে এসেছে যুগের পর যুগ। কিন্তু এখন যে যুগ পাল্টেছে সে হুশবুদ্ধিও তাদের নেই! তাদের বেআইনি দাপট চিহ্নিত করে তিতাসের মৃত্যুর জন্যে আব্দুস সবুরদের দায়ী করে জাতির কাছে উপস্থাপনের নতুন মিডিয়া আজ উপস্থিত। সোশ্যাল মিডিয়া এখন জনগনের মিডিয়া। এখানে মানুষকে মানুষ জানোয়ারকে জানোয়ার লেখা যায় প্রকাশ করা যায়। কথিত ভিআইপি আব্দুস সবুর মন্ডলের অপরাধ আড়াল করে যে রিপোর্ট তিনজন মিলে দিয়েছেন এরা তিন জানোয়ার। এরা মিথ্যাবাদী। তিতাসের মতো একটি বাচ্চা ছেলের মৃত্যু নিয়ে মিথ্যাচার করে এরা তাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে। এদের ছাড়া যাবেনা। এই তিন জানোয়ার ছাড় পেলে তিতাসের মতো আরও জীবন হত্যার নতুন ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। বাংলাদেশ এদের ব্যাপারে সাবধান।
পাদটীকাঃ কথিত ভিআইপি যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মন্ডল যদি জানোয়ার না হয়ে মানুষ হতেন তাহলে তিতাসের শোকার্ত পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়াতেন। বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা যতোদিননা রাঘববোয়ালদের ধরার নিয়ত না করবে ততোদিন বাংলাদেশ বদলাবেনা। অস্ট্রেলিয়ার এক ম্যাজিস্ট্রেটকে একদিন পুলিশ রাস্তায় গাড়ি চালানো অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বলার অপরাধে ধরে জরিমানার টিকেট ধরিয়ে দিলো। এদেশে এটি জরিমানার প্রথম পাঠ। তিনশো পয়ষট্টি ডলার জরিমানা, সঙ্গে চার পয়েন্ট কাটা। এরপর আইনভঙ্গকারীর বাসার ঠিকানায় যায় জরিমানা পরিশোধের তারিখ সহ চিঠি। এই ম্যাজিস্ট্রেটের চিঠির সঙ্গে পুলিশ দিলো তার কললিস্ট। ঘটনার দিন তিনি ওই পথ দিয়ে যাবার সময় অত নাম্বার থেকে আসা কল রিসিভ করে অত মিনিট কথা পেয়েছেন। ওই কললিস্ট পেয়ে সেই ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। কারন তার বিবেক বলেছে এ ধরনের অভিযোগ মাথায় নিয়ে তার বিচারকের চেয়ারে আসীন থাকা অনুচিত। তিতাস হত্যাকারী কথিত ভিআইপি আব্দুস সবুর মন্ডল, তার পিঠ বাঁচানোর দায়িত্ব গ্রহনকারী তিন জানোয়ার বাংলাদেশের বাস্তবতায় পদত্যাগ করবেননা। এরজন্য আপাতত তাদের চিকিৎসা হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া সচিত্র ট্রায়ালে। যাতে এরপর আর যাতে কেউ এমন মিথ্যা রিপোর্ট দেবার সাহস না করেন।