শেষ দফার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াতেও কোন রোহিঙ্গা শরণার্থী তাদের দেশে ফেরত যায়নি। অথবা ফেরত যেতে তাদের রাজি করানো যায়নি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব একটি ঘোষনাও আছে। তাহলো, ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন শরণার্থীকে জোর করে ফেরত পাঠানো হবেনা। দৃশ্যমান একটি সরকারি ঘোষনা-অবস্থান স্বত্ত্বেও কতিপয় সরকারপন্থী সোশ্যাল মিডিয়া অকারন কাঁপাচ্ছেন। ভাবখানা এই যে যেকোন মুহূর্তে শরণার্থীদের পিটাইয়া নাফ নদী পার করে দেবেন! আদতে যা করবেননা বা পারবেননা তা নিয়ে বিপদজ্জনক উস্কানি কেনো দেন? পরিস্থিতিকে বিপদজ্জনক বলার কারন কক্সবাজার এবং শরণার্থী ক্যাম্পগুলোর আশপাশের পরিস্থিতি। কারন এতো বিপুল সংখ্যক শরণার্থী উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকার পরিস্থিতি বিস্ফোরন্মুখ হয়ে আছে। পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে গোটা এলাকায়। উত্তেজক কথাবার্তায় এ ইস্যুতে বাংলাদেশের সমুদয় অর্জন পন্ড করে দেবেন না।
এখন ঘৃতাহুতির মতো যে কোন উস্কানি গোটা এলাকায় যদি কোন বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তা বাংলাদেশের পক্ষে যাবেনা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের ত্রিপুরার জনসংখ্যা ছিল ১৪ লক্ষ। বাংলাদেশ থেকে ১৬ লক্ষ শরণার্থী সে রাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। ৯ মাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছিল বলে সেই শরণার্থী চাপ মানবিক ও আন্তরিক সেই রাজ্যবাসীকে অনির্দিষ্টকাল পোহাতে হয়নি। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মিয়ানমারের পরিকল্পিত মানব ট্র্যাজেডি। মিয়ানমার কখনো চাইবেনা রোহিঙ্গারা স্বভিটায় ফেরত যাক। বাংলাদেশ বা বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোও রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত যাওয়ার অবস্থার সৃষ্টি করতে পারেনি। রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে এক জায়গায় বাংলাদেশের মানুষজন শুকরিয়া করতে পারেন। বাংলাদেশের শরণার্থীদের ঘানি টানতে একাত্তরের ভারতে শরণার্থী ট্যাক্স বসানো হয়েছিল। বাসে চড়লে বা সিনেমা দেখতে গেলেও দিতে হতো শরণার্থী ট্যাক্স। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষজনকে অন্তত এ ইস্যুতে কোন ট্যাক্স দিতে হচ্ছেনা। কিছু বল্গাহীন কথাবার্তার ওপর ট্যাক্স বসানো জরুরি হয়ে পড়েছে।
রোহিঙ্গারা আশ্রয়ের আশায় প্রথম যখন বাংলাদেশে আসে তখন ইসলামী উম্মাহ’র জোশে আহলান ওয়াস সাহলান বলে তাদের অভ্যর্থনা করা হয়েছিল। এবার কিন্তু রোহিঙ্গাদের কেউ অভ্যর্থনা করে আনেনি। প্রথমে তাদের প্রবেশে বাধাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু নৌকাডুবিতে যখন রোহিঙ্গা নারী শিশুদের লাশ ভাসতে শুরু করে বাংলাদেশ উপকূলে, তখন মানবিক কারনে বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনপুত ববির স্ত্রী বাংলাদেশে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা। জাতিসংঘের হয়ে তিনিই মূলত শরণার্থীদের আশ্রয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। কিন্তু বেচারী বিদেশিনী হওয়াতে বাংলাদেশ কৃতিত্ব দেয় তার বাংলাদেশি শাশুড়িকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন তাঁর বোন শেখ রেহানা বলেছেন তুমি দেশের ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়া পারো। এই কয়েক লাখ শরণার্থীকে খাওয়াতে পারবেনা? মূলত এসবই এবার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় পাবার ভিত্তি।
এত বিপুল সংখ্যক শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের প্রশংসার জোয়ার বইতে শুরু করে। শেখ হাসিনা পান ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’র গৌরব। বিশ্বজুড়ে ছিঃ ছিঃ ওঠে মিয়ানমারের নোবেল বিজয়ী অং সাং সুকির নামে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাকে দেয়া পদক কেড়ে নেয়া হয়। বিদেশ ভ্রমনে গেলেই তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয় বলে সুকি এরমাঝে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। অথবা তিনি আর আগের মতো বাইরের দাওয়াত পাচ্ছেননা।
উল্টো রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুর কারনেও শেখ হাসিনার জন্যে আন্তর্জাতিক দাওয়াত-গুরুত্ব বেড়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েও বিদেশিরা সে রকম হৈহৈ করে ওঠেনি। এবার রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আসার পর বাংলাদেশ এমন কিছু আন্তর্জাতিক ফোরামে দাওয়াত পেয়েছে, বিশেষ দাওয়াতি হিসাবে শেখ হাসিনা সে সব আসরে গিয়েছেন, সাধারনত এমন সব ফোরাম কখনোই বাংলাদেশকে ডাকেনা। এসবকে উল্লেখ করে বলা যেতে পারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক কারনে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বেড়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ত্রান কার্যক্রম নিয়েও দেশেবিদেশে কোন প্রশ্ন ওঠেনি।
নিউটনের তৃতীয় সূত্র হচ্ছে প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যাও তাই বাংলাদেশকে হ্যান্ডেল করে যেতে হবে সতর্কভাবে। এ ইস্যু একদিনে যেমন বাংলাদেশকে পোড়াচ্ছে, প্রতিকার খুঁজতে হবে অন্যত্র। আমার সাধারন জ্ঞানের ধারনা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফেরত নেবেনা বা তাদের সেখানে ফেরত যাবার মতো কোন পরিবেশ নেই। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে বা মিয়ানমারের ওপর কোন চাপ সৃষ্টি করতে পারে এমন কোন দৃশ্যমান আন্তর্জাতিক শক্তিও পক্ষে নেই বাংলাদেশের পক্ষে। এবার রোহিঙ্গা শরণার্থী ঢল বাংলাদেশে পৌঁছবার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কাঁদো কাঁদো স্ত্রীর ছুটে আসা আমরা দেখেছি। মিডিয়ায় তার আহ উহ সব প্রচার হয়েছে। সবাই প্রশংসা করে বলেছে এমন মানবিক মহিলা দ্বিতীয়াটি আর হতেই পারেনা। ফলাফল কী? অশ্বডিম্ব। একজন শরণার্থীও সঙ্গে করে নিয়ে যাননি তুরস্কের ফার্স্টলেডি। এমন বিশ্ব এখন রোহিঙ্গাদের জন্যে চালগম, আহ-উহ দেবে। কিন্তু একজন শরণার্থীও নিয়ে যাবেনা।
এখন রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসনে বড় দুই প্রতিবন্ধক চীন এবং ভারত। আরাকান অঞ্চলে গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে তুলছে চীন। রোহিঙ্গাদের জায়গাজমি তাদের দরকার। মিয়ানমার চীনের একটি বড় বাজারও। চীনকে পাল্লা দিয়ে মিয়ানমারের বাজারও হাতছাড়া করতে রাজিনা ভারত। রোহিঙ্গাদের ধর্মও ভারতীয় অনাগ্রহের বড় একটি কারন। যে সব অমুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে এসেছিলেন তাদেরকে চুপচাপ ভারতীয় উদ্যোগে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ যখন ভারতকে ‘একটা কিছু করেন দাদা, প্লিজ মুখটা অন্তত রক্ষা করেন’, বলে বেশি চাপাচাপি করে তখন ভারত চাল সহ নানা ত্রানের পরিমান বাড়িয়ে দেয়। রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসনে ভারত যে সব ঘর বানিয়ে দিয়েছে এবং দিচ্ছে সেগুলো মূলত বাংলাদেশের আশ্রয়ন প্রকল্পের মতো। ভূমিহীন-গৃহহীনদের বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ইদানিং খাসজমিতে যে সব ঘর বানিয়ে দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের জন্যেও ভারত তৈরি করে দিচ্ছে গুচ্ছগ্রাম। অর্থাৎ প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গারা তাদের বাড়িঘরে ফিরতে পারবেনা। তাদের থাকতে হবে এসব গুচ্ছগ্রামে! এখন এখানে তারা ক্যাম্প জীবনে আছে। খাবার পাচ্ছে। ওখানে ফেরত যাবার পরও থাকবে গুচ্ছগ্রামে। খাবারেরও কোন গ্যারান্টি নেই। এক বন্দী জীবন শেষে আরেক বন্দী জীবনে তারা কেনো যাবে? মোটকথা রোহিঙ্গাদের নির্ভয়ে নিজের দেশে নিজের গ্রামের স্বভিটায় ফেরত যাবার মতো কোন আশ্বাসই কোন পক্ষ সৃষ্টি করতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ চীন সফরের সময় রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন ইস্যু গুরুত্ব পাবে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সে আশাও স্বাভাবিক কারনেই ভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের। চীন শরণার্থীদের জন্যে চাল সাহায্যের অঙ্গীকার করেছে। মেহমানকে মুখের ওপরতো আর না করা যায়না। এটা অভদ্রতা। সে কারনে চীনা কূটনৈতিক ভাষায় তারা সহযোগিতার যে সব কথা বলেছে তাতেই আমরা খুশি হয়ে বগল বাজিয়ে বলেছি, ‘এতোদিন চীন এতোটাওতো বলেনি, এবার বলেছে। এটা অগ্রগতি। বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয়’ এসব বলে আমরা শান্তনা পুরস্কার নিতে চেয়েছি।
আসলে সুবিধামতো শান্তনা পুরস্কার সংগ্রহে বাংলাদেশের জুড়ি নেই। অনেকের ধারনা প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের পর চীনের মুখ রক্ষায় এবারকার প্রত্যাবাসন শুরুর কথা বলেছিল মিয়ানমার। যদিও নকশার বিষয়টি তারা এমনভাবে সাজিয়েছে যাতে একজন রোহিঙ্গাও ফেরত না আসে। এখন দুষ্টু বুদ্ধির বৌদ্ধ রাষ্ট্রটি বলা শুরু করবে আমরাতো শরণার্থী গ্রহনে প্রস্তুত ছিলাম কিন্তু বাংলাদেশের সহযোগিতার অভাবে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। জীব-প্রানীর প্রানরক্ষার মানবিক এক আবেদনসহ বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তন করেছিলেন গৌতম বুদ্ধ। কিন্তু বুড্ডিস্টরা যে চরম খারাপও হতে পারে এর দৃষ্টান্ত এখন মিয়ানমার। এরা শুধু প্রানীর রক্ত না রোহিঙ্গা মানুষের রক্তও খায়। এবং সকালসন্ধ্যা ঢাহা মিথ্যা কথা বলে। এই মিথ্যুকদের পক্ষ নিয়েছে চীন-ভারত নামের বাংলাদেশের দুই বন্ধু রাষ্ট্র।
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ার খবর পড়ে হাসি। খালি নাকি সবাই বাচ্চা পয়দা করে! আরে বাবা যাদের কোন কাজ নেই, নিরাপদ স্ত্রী সহবাস ছাড়া জীবনের দ্বিতীয় কোন বিনোদনের ব্যবস্থা নেই, তারা বাচ্চা পয়দা ছাড়া আর কী করবে? রাতের বেলা নাকি শরণার্থী শিবিরে ঢোকা যায়না! সে এক নিষিদ্ধ জগৎ, ইত্যাদি। আরে বাবা এমন হয়ে থাকলেতো এর দায় সরকারের। বিভিন্ন দেশে শরণার্থী শিবির মানেই জেলখানা। বাংলাদেশের যে সব শরণার্থী বিভিন্ন দেশের শরণার্থী শিবিরে আছেন তারা জানেন জেলখানা মানে কী। এখন শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ কোনভাবেই অভিবাসীদের গন্তব্য দেশ নয়। বাংলাদেশের হিন্দুরা নিরাপত্তার কারনে ভারতে পাড়ি জমান। কিন্তু কাশ্মীর বা ভারতের কোন অঞ্চলের মুসলমান নিরাপত্তার জন্যে বাংলাদেশে আসেননা। রোহিঙ্গারাও সখ করে বাংলাদেশে আসেনি। দীর্ঘ ক্যাম্প জীবন তাদের ভালোও লাগেনা। আগে যে সব রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে এসেছিলেন তাদের বেশিরভাগ বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। এখনকার রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও এখানে থাকতে চাননা। কিন্তু তারা যখন বিভিন্ন দেশে চলে যেতে চান, তখন মানবপাচার বলে বাংলাদেশের কিছু লোকজন হৈহৈ করে ওঠেন! তাদের এখানে আপনারা রাখতেও চান না আবার চলে যেতেও দেবেননা! এটা কী স্ববিরোধিতা নয়?
ইদানীং দেখছি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন শুরু না হবার দায় মিয়ানমারকে না দিয়ে বিভিন্ন এনজিও সহ বিদেশি সংস্থাগুলোর ওপর চাপানো হচ্ছে! বিভিন্ন এনজিও সহ বিদেশি সংস্থা এ নিয়ে কী করবে না করবে তাতো বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন প্রাপ্ত। তাদের কাজ পছন্দ না হলে আপনি অনুমোদন বাতিল করে তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দিতে পারেন। তা না করে আবেগী কথাবার্তা হাস্যকর নয় কী? শরণার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করাই তাদের প্রশিক্ষন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক শরণার্থীরাও এসব সুবিধা ভোগ করেন।
কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার এক স্কুল ছাত্র কক্সবাজারের একটি রোহিঙ্গা শিবিরে তার একটি নির্মিতব্য ডকুমেন্টারির শুটিং করতে গিয়েছিল। সে এসে যা বললো তা আরও ভীতিকর। তার ধারনা হয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যে কোন সময় তাদের নিয়ে কর্মরত জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করতে পারে। কারন তাদের অভিযোগ জাতিসংঘ কর্মকর্তারা তাদের সমস্যার সমাধান না করে তাদের উসিলায় এখানে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। বাংলাদেশ সরকারেরও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। কারন এমন কিছু ঘটলে দায় বা বাংলাদেশ সরকারের ওপরই বর্তাবে। কারন এলাকাটি বাংলাদেশের। বিলাস বহুল জীবন নিয়েও কিছু বাংলাদেশি মিডিয়ার ভুল প্রচারনা আছেন। গুলশান-বারিধারায় কূটনীতিক সহ বিদেশি সংস্থায় কর্মরত বিদেশিরা যে সব বাড়িতে থাকেন, নিজের দেশে এটিই তাদের স্বাভাবিক জীবন। এসব দেশের সব বাড়িঘরই এমন আরামপ্রদ-নিরাপদ করে নির্মান করা হয়।
মোটকথা রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া দিতে সবার সাবধান হওয়া উচিত। কারন এ ইস্যুর কারনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মাদার অব হিউম্যানিটি পেয়েছেন। এর খুশিতে সবাই তখন ফেসবুক ভাসিয়েছেন। আপনারা সেই মাদার অব হিউম্যানিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন এমন কোন খবর কারো জানা নেই। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমার নেবেনা। আটকেপড়া পাকিস্তানিদের একজনকেও পাকিস্তান ফেরত নেয়নি। এখন বাংলাদেশের উচিত এমন কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো কোন দেশ কত রোহিঙ্গা নেবে এমন পথ খোঁজা। যখন যে ভালো ভালো কথা বলতে আসবে তাদের বলা, অনেক ভালো কথা শুনিয়েছেন। আমরা আপনাদের ভালো কথায় মুগ্ধ। এখন সঙ্গে কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে যান। অথবা তারা যদি কোন দিকে চলে যেতে চায় তাহলে যেতে দিন। দেখেও না দেখার ভান করুন। দরকার হলে গোপনে নৌকা ভাড়া করে দিন। ফেসবুকে স্ববিরোধী হাত পা না ছুঁড়ে বাস্তব বুদ্ধি দিন। এত সুন্দর করে যারা ক্রসফায়ার, এনকাউন্টারের গল্প বলতে পারেন। এটাও পারবেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীর বোঝা ঘাড় থেকে নামাতে বাংলাদেশের এখন সম্ভাব্য সব বাস্তব পথের অনুসন্ধান শুরু করা দরকার।